কাঁচা হলুদের ১৬ টি কার্যকারী গুনাগুন ও উপকারিতা
প্রাচীন কাল থেকেই হলুদ চিকিৎসার ক্ষেত্রে রূপচর্চায় শত বছর আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হলুদকে কেউ কেউ ওষুধি ভেষজ নামেও আখ্যায়িত করে থাকেন। মানবদেহের রোগ প্রতিরোধে হলুদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হলুদে এন্টি ইনফ্লামেশন,আন্টি অক্সিডেন্ট্ , অ্যান্টিসেপটিক ,এন্টি ব্যাকটেরিয়া ও কার্চুমি উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরে অনেক সমস্যা সমাধান করতে পারে বিশেষ করে এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন এমন রোগের ক্ষেত্রে । তাহলে চলুন হলুদের কার্যকরী গুনাগুন উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হোক।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
ডায়াবেটিস রোগটি সকলের কাছে পরিচিত এটি প্রায় শতকরা 80 পার্সেন্ট লোকের ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীর নির্দিষ্ট কোন ঔষধ এখনো বাজারে মিনা বড় দায়। দৈনন্দিন জীবন আমাদের অসহ্য হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত ডায়াবেটিসের জন্য ওষুধ খেতে খেতে।
কিন্তু তারপরেও আমাদের নির্দিষ্ট করে কোন সুরাহা মিলছে না। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত সকালে যদি আপনি কাঁচা হলুদ খান তাহলে আপনার রক্তের শর্ট করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগে পায় না এতে করে আপনার ডায়াবেটিস কমতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার ঠেকাতে সাহায্য করে
হলুদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রক্ত কণিকাকে নিরাপদ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ফলে স্তন্য ক্যান্সার পাকস্থলী ক্যান্সার ও ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার তৈরি হতে পারে না।
ক্ষত সরাতে সাহায্য করে
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম করার জন্য আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষত সৃষ্টি হয়ে থাকে। আমরা যদি কাঁচা হলুদের সঠিক ব্যবহার করি তাহলে কাঁচা হলুদের মধ্যে উপস্থিত কার কিউ এবং আরো নানান সব আন্টি উপাদান যেকোনো ধরনের খতর যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।
এটা আঘাত সরাতেও দারুন ভাবে কাজ করে থাকে। সেজন্য ছোট বাচ্চাদের নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসা বিজ্ঞানরা, এছাড়াও আপনার ক্ষতস্থানে অল্প পরিমাণ হলুদ পেতে লাগিয়ে দিলেও উপকার পাওয়া যায়।
পিরিয়ডের সমস্যা দূর করে
অনিয়মিত আছি ক্রোধ হরমোনের জন্য মাত্রা নিয়ন্ত্রণক বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে হলুদে কার কিউমিন। হলুদের এই উপাদান পিরিয়ডের আগে ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।।
মস্তিষ্কে ক্ষয়জনিত সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে
হলুদে থাকা এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান পারকিনসন আলজেমার ত্রিসুর ত মূলত অসুস্থতার রোদে সক্ষম এটি আমাদের মস্তিষ্ককে তথ্য আদান প্রদানে পরিমাণ বাড়ায় হতাশার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
লিভার সুরক্ষিত রাখে
হলুদ নানান রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে বিশেষ করে লিভারের বহুবৃদ্ধি হেপাটোনিস্ট সিরসিক গল ব্লাডের মত সমস্যা সমাধান করতে হলুদ বিশেষভাবে কার্যকর।
মাথার অসহ্য যন্ত্রণা সরাতে
এখন থেকে যেকোনো সময় মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা হলেই এক কাপ হলুদ মেশানো দুধ খেয়ে নিতে পারেন দেখবেন আপনার মাথা যন্তনা কমে গেছে। হলুদের মধ্যে থাকা কার কিউমিন এবং এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরের মধ্যে প্রদাহ কমায়। ফলে মাথার যন্ত্রণা তাড়াতাড়ি কমে যায়।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত হলুদ খাওয়া শুরু করলে হজমের সহায়ক হয় । কাঁচা হলুদের রয়েছে এনজাইম যা খাবারকে দূরত্ব থেকে সাহায্য করে এবং বদহজমের আশঙ্কা কমে যায়। সেইসঙ্গে গ্যাস অম্বল এবং এসিড সমস্যা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কাঁচা হলুদে রক্ত পরিষ্কার রাখে
কাঁচা হলুদ খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়া শুরু করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং রক্ত কণিকা বাড়িতে সাহায্য করে থাকে। আমাদের অবশ্যই বেশি বেশি কাঁচা হলুদ খাওয়া উচিত।
কেননা আমাদের রক্ত পরিষ্কার থাকলেই রক্তের ইনফেকশন থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। চিকিৎসকদের মতে সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়া অভ্যাস খুবই ভালো।
কাঁচা হলুদ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে
নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ খেলি ত্বকের ভিতরে থাকা টনিক্স উপাদান বাইরে বেরিয়ে যায় সেইসঙ্গে ক্লোজেনের উপাদান বেড়ে যায় ফলে ত্বক এত মাথায় উজ্জ্বল হয় এবং অচ্ছন্ন হয়ে ওঠে যে বলি রেখে কমাতে শুরু করে সেই সঙ্গে ব্রণ এমনি এবং কালো শোকের মত সমস্যা কমতে শুরু করে।
এক কথায় শীতকালেও যদি তোকে সৌন্দর্য ধরে রাখতে চান তাহলে আজ থেকেই হলুদ খাওয়া শুরু করে দিন কাঁচা হলুদ ত্বক ফর্সা ও লাবণ্যময় করে তোলে তাই রাতে ঘুমানোর আগে দুধের সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেয়ে আপনার রঙ ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হতে শুরু হবে।
কাঁচা হলুদ সর্দি কাশি কমাতে সাহায্য করে
কাঁচা হলুদ সর্দি হওয়ার আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে কাঁচা হলুদে উপস্থিত এন্টিভাইরাস এবং আন্টি ব্যাকটেরিয়া প্রপার্টিজ একদিকে নানাবিদ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায় তেমনি এর মধ্যে থাকা এন্টি ইনফরমেটরি প্রপার্টিজ রেসিপি শরীরের ইনফেকশন সর্দি ঠান্ডা লাগা কমাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে।
বিশেষ করে এই শীতের সময়ে ছোট বাচ্চাদের নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। কিভাবে বাচ্চাদের কাঁচা হলুদ খাওয়াবেন ।সামান্য পরিমাণের কাঁচা হলুদ রস করে নিতে হবে। তার মধ্যে অল্প একটু মধু মিস করে খাওয়াবেন, নিয়মিত খাওয়ালে বাচ্চারা ঘন ঘন অসুস্থ থেকে রক্ষা পাবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
কাঁচা হলুদ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে আমরা যখন বার্ধক্য বয়সে পৌঁছায় তখন নানান কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে নিয়মিত হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসক। আমরা যদি নিয়মিত হলুদ খেতে পারি তাহলে হলুদের মধ্যে কার উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ফলে কোন রোগ ধারে কাছে ঘেষতে পারবে না।
কাঁচা হলুদের থাকা কার কেউ নেই নামক উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যা শরীরের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
কাঁচা হলুদে কষ্টকাঠিন্য দূর হয়
কাঁচা হলুদ নিয়মিত খেলে অবশ্যই আপনার কষ্ট কাঠিন্য দূর হয়। কাঁচা হলুদ খেলে পেট পরিষ্কার থাকে তাই কষ্ট কাঠিন্য থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ হয়। হলিদের ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে শুধু আমাদের দেশে না বিভিন্ন দেশে এ হলুদ এর প্রচলন রয়েছে প্রাচীন কাল থেকে।
এখন উন্নত চিকিৎসা ছিল না তখন কাঁচা হলুদ খেয়েই মানুষ সুস্থ থাকতেন কাঁচা হলুদ আপনার পেটের চর্বি কমাতেও সাহায্য করে থাকে। কাঁচা হলুদ আপনার শরীরকে মজবুত রাখতে এবং কঠিন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
কাঁচা হলুদ হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কাঁচা হলুদ হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত কাঁচা হল খাওয়ার শুরু করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস অম্বল এবং এসিলিটি এর মত সমস্যা কমতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে প্রসঙ্গত গ্যাসে নোটেস্ট ইনফেকশন কমাতে এবং হলুদ পানির বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তাই নির্দ্বিধায় বলা যায় কাঁচা হলুদ আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়ায়। কাঁচা হলুদ সকালে খালি পেটে খাবেন এবং রাত্রে ঘুমানোর আগে খাবেন।
কাঁচা হলুদ বয়সের ছাপ কমায়
কাঁচা হলুদ বয়সের ছাপ কমায় কিভাবে জানেন কাঁচা হলুদ পেস্ট করে নিয়মিত মুখে মাখলে মুখে ব্রণ দাগ দূর করে এবং এর সাথে বয়সের ছাপ কমাতেও সাহায্য করে পার্লারে না গিয়ে বাসায় আমরা কাঁচা হলুদ মেখে উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় স্কিন পেতে পারি বয়সের ছাপ কমাতে কাঁচা হলুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাই আমরা বিয়ে অনুষ্ঠানে কাঁচা হলুদ ছাড়া চলে না বললেই চলে।
কেননা বর কনে উভয়ে কাঁচা হলুদ মা খাওয়ানো হয় তাই আমাদের ভবিষ্যৎ চাপ কমাতে বলেন আর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেই বলেন কাঁচা হলুদের গুরুত্ব অপরিহার্য।
কাঁচা হলুদ হাড়ের ক্ষয় রোধ করে
হলুদের প্রধান উপাদান আর কেউ যা হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। কাঁচা হলুদ আপনার শরীরে শক্তিশালী করে ও হাড় মজবুত রাখতে সহায়তা করে তাই অবশ্যই আমাদের নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে ।তাই বলে গুড়া হলুদ খাওয়া যাবেনা হলুদের অনেক ভেজাল থাকে, সেটা আমাদের শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
আমরা চেষ্টা করব রাত্রি কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খাওয়া চিবিয়ে খেতে না পারলে কোন ফলের রসের সাথে মিস করে খেতে পারেন অথবা কাঁচা হলুদ আপনি মধুর সাথে মিস করে খেতে পারেন খুব উপকার আমাদের শরীরের জন্য এমনই কাঁচা হলুদ আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকার
কোলেস্টরল কমাতে সাহায্য করে
কাঁচা হলুদ রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে থাকে প্রতিদিন খালি পেটে অল্প পরিমাণের কাঁচা হলুদ যে বিয়ে খেলে আপনার রক্তের বেড়ে ওঠা কোরেস্টেরল কমে যাবে এবং অন্যান্য বড় বড় রোগের হাত থেকে বেঁচে যাবে।
কেননা কাঁচা হলুদে আছে অ্যান্টিসেপটিভ এন্টি ব্যাকটেরিয়া ও কার কিউমিন এর উপাদান ,একাই একশ টিরও বেশি রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
উপসংহার
কাঁচা হলুদের মধ্যে অনেক গুনাগুন বিদ্যমান সুস্থ থাকার জন্য আমাদের অবশ্যই কাঁচা হলুদ খাওয়া খুবই প্রয়োজন। কাঁচা হলুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পটাশিয়াম ভিটামিন বি ৬ ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন সি থাকে যা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে ।
সকালে ঘুম থেকে উঠে কাঁচা হলুদ খেয়ে যে ত্বকের উজ্জ্বল বাড়ে ,খাবার ঠিকমতো হজম করে, এসব কথা তো আমরা বহুদিন ধরে শুনেছি। কোলেস্টোরেজ হাড অ্যাজমা ক্যান্সার ডায়াবেটিস মস্তিষ্কের মতো রোগ প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে থাকে কাঁচা হলুদ।
www.alltipsatoz.comনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url