কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
কানাডা বিশ্বের সবচেয়ে উন্ননশীল দেশ এবং বাংলাদেশ প্রবাসীদের নিকটে কারণ একটি
জনপ্রিয় গন্তব্য। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা উন্নত জীবনযাত্রা এবং কর্মসংস্থানের
বিসাল সুযোগ-সুবিধার কারণে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ
কানাডায় কাজ করার জন্য যায়।
কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সঠিক গাইডলাইন সম্পর্কে জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এ পোস্টটিতে কানাডা ওয়ার্ক পারমিট
ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পেজ সূচিপত্রঃ কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন
- কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসাটের জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন
- কানাডা কোন কোন কাজে চাহিদা সবচাইতে বেশি
- কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ কত
- কানাডা যেতে খরচ কত লাগে
- কানাডা ভিসার দাম কত
- কানাডা যেতে কত বয়স লাগে
- কানাডা ভিজিট ভিসা পাওয়ার নিয়ম
- শেষ কথা/ কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বলতে সাধারণত আমরা কোন না বুঝে থাকি আপনি কোন কাজের
জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। আপনাকে যাচাই-বাছাই করে কোন কাজের জন্য যে ভিসা
প্রদান করা হয় তাকে আমরা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বলে থাকি। আপনারা অনেকেই হয়তো মনে
করেন যে কানাডা সরাসরি কাজের খোঁজ করার কোন সুযোগ নেই বা কানাডা গিয় কাজ খুঁজে
নেব। এটা কিন্তু আপনার ভুল ধারণা কারণ আপনি সেখানে গিয়ে কাজ নাও পেতে পারেন। তাই
আপনি যদি কানাডা কোন কাজে বা চাকরির উদ্দেশ্যে যেতে চান তাহলে আপনাকে কানাডার
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ায় ভালো এতে আপনি নিশ্চিন্তে যেতে পারবেন।
কানাডায় অনেক কোম্পানি যখন নিজের দেশের যোগ্য লোক খুঁজে পাইনা তখন বিদেশ থেকে
সার্কুলার প্রকাশ করার মাধ্যমে লোক নিয়োগ করে থাকে। কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
জন্য অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট আছে যেগুলো আপনি দেশে বসে থেকেই চাকরির আবেদন
করতে পারবেন। বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইট থেকে কোম্পানি নিতে লোক নিয়োগ দিয়ে
থাকে। প্রথমে তারা সেখানে বিজ্ঞাপন দেয়। তারপর অনলাইনে ইন্টারভিউ নেওয়ার
মাধ্যমে কর্মীর প্রাথমিক যোগ্যতা যাচাই করে নিশ্চিত করে থাকে। এছাড়াও আপনি যদিগ
গুগল এ LMIA (Labor Market Impact Assessment) লিখে সার্চ দিলে এ ধরনের অনেক
চাকুরীর বিজ্ঞাপন খুঁজে পাবেন।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন
আপনি যদি সরকারিভাবে ওয়ার্ড পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও যুব উন্নয়ন কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। আপনি
বেসরকারিভাবেও কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করতে পারবেন। আপনি বেসরকারি
ভাবেও কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করতে পারেন। এজন্য কানাডা ও বাংলাদেশ
সরকার দ্বারা অনুমোদিত ভিসা অফিসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে আবেদন ফরম সংগ্রহ করে সকল
তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আবেদন ফরম জমা দিতে হবে।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট
গুলোর মধ্যে একটি হল এল এম আই এ নাম্বার। কানাডা কোম্পানি ও সরকার কর্তৃক এই
ধরনের ডকুমেন্ট প্রদান করে থাকে। এটা পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই অনলাইনে বিভিন্ন
ওয়েবসাইটে জবের জন্য আবেদন করতে হবে এবং অনুমোদন নিতে হবে। এরপর আপনি কান্না
ভিসা প্রসেসিং এর সকল কাজ করতে পারবেন অনুমোদন পাওয়ার পর আপনাকে কান্না ভিসা
আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন ফরম সংগ্রহ করার পর সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাকে
ফামটি পূরণ করে সাবমিট করতে হবে। এই কাজটি আপনি অনলাইনে করতে পারেন। তাছাড়া আপনি
যদি আবেদন করতে নাও পারেন তাহলে একজন অভিজ্ঞ মানুষের সহায়তা নিবেন। এতে করে
আপনার কোন ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসাটের জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন
কানাডায় অবস্থিত ব্যক্তির সুপারিশ করলে সহজে কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
পাওয়া যায়। কানাডায় ওয়াট পারমিট ভিসা তৈরির কাজ পত্র এজেন্সি অনুযায়ী ভিন্ন
হতে পারে। তাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে হলে কিছু অবশ্যই পড়বে এবং এবং
কানাডা যাওয়ার যোগ্যতা অবশ্যই থাকতে হবে। কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তে যে
সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো
বৈধ পাসপোর্টঃ
আপনি যদি কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চান তাহলে আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ
পাসপোর্ট এর মে য়াদ থেকে কমপক্ষে ছয় মাস বেশি হতে হবে এবং কমপক্ষে দুইটি ঢাকা
পৃষ্ঠায় রাখতে হবে
কাজের অফারঃ
আপনি কাজের জন্য যেকোনো একটি কোম্পানি কোম্পানির কাছ থেকে কাজের অর্ডার পেতে হবে।
কোম্পানি আপনাকে নিয়োগ অফার ওভার লেটার প্রদান করবে এবং এতে আপনার কাজে ভূমিকা ও
অন্যান্য বিষয় উল্লেখ্য হবে ।
জন্ম নিবন্ধনঃ
জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ ।
পাস পোর্ট আকারে ছবিঃ
দুই কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি লাগবে
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
আপনার সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্রের সত্যায়িত্বে জমা দিতে হবে
কাজের অভিজ্ঞতাঃ
কাজের অভিজ্ঞতা প্রমাণপত্র প্রমাণপত্র প্রয়োজন নাও হতে পারে
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটঃ
আপনার নিকটতম থানা থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করতে হবে।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টঃ
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য একটি মেডিকেল টেস্ট করতে হবে এবং এটি নির্দিষ্ট
স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ কত
কানাডায় সরকারি ও বেসরকারি দুই ভাবেই যাওয়া যায়।সরকারিভাবে কানাডায় যেতে
তুলনামূলকখরচঅনেক অংশই কম হয়। সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় জেনে নিতে পারেন
এ পোস্টটি পড়ে। আর বেসরকারিভাবে গেলে বিভিন্ন এজেন্সির সাহায্য নিতে হয় বিধায়
খরচ অনেক বেশি পড়ে ।
কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যেতে চাইলে আপনার অনুমানিক ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা
খরচ হবে। এরমধ্যে সরকারি বেসরকারি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ফ্রি বিমান ভাড়া মেডিকেল
টেস্ট খরচ এবং ভিসা আবেদন ফ্রি অন্তর্ভুক্ত। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সাধারণত ১ থেকে
২ বছরের জন্য দেয়া হয়ে থাকে ভিসার মেয়েদের উপর নির্ভর করে কম বেশি হয়।
কানাডায় কোন কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি
আপনারা যারা কাজের উদ্দেশ্যে কানাডা যেতে চান তারা অনেকে জানতে চান যে কানাডায়
কোন কোন কাজে চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কানাডায় মূলত কাজের বা চাকরির জন্য দক্ষ ও
অভিজ্ঞ স্রোহকে চাহিদা সব সময় বেশি। নিচে কানাডায় কোন কোন কাজের চাহিদা বেশি
তার লিস্ট দেয়া হলো
- আইটি ডিপার্টমেন্ট
- ড্রাইভিং
- সফটওয়্যার ডেভেলপার
- ডাটা সাইন্টিস্ট
- ইলেকট্রিশিয়ান
- গ্রাফিক ডিজাইন
- ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট
- ডেলিভারি ম্যান
- নির্মাণ শ্রমিক
- হোটেলের রেস্টুরেন্টের জব
- ক্লিনার
- শেফ ও কোকো
- বিক্রয় কর্মী
এছাড়াও হিউম্যন রিসোর্স ম্যানেজার নার্স ফিজিওথেরাপি হিসাবরক্ষক ও মেকানিক্যাল
টেকনিশিয়াল কাজের চাহিদা কানাডায় অনেক বেশি।
কানাডা যেতে খরচ কত লাগে
কানাডা যাওয়ার খরচ কত এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপরে। ভিসার জন্য
আবেদন ফ্রি থেকে শুরু করে মেডিকেল পরীক্ষার খরচ প্রাইমারি ট্রিক ডেটা সংগ্রহ
ইমিগ্রেশন এজেন্সি ও এজেন্সি বা দালালের খরচ। সব মিলিয়ে বর্তমানে কানাডা যাওয়ার
জন্য নূন্যতম ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ওয়াক পারমিট ভিসার কানাডা যাওয়ার ন্যূনতম খরচ 8
থেকে 12 লাখ টাকা পর্যন্ত হয়। এছাড়াও কানাডা যাওয়ার খরচ কত হবে তা সম্পূর্ণ
আপনার ভিসা এজেন্সি ও দালালের উপর অনেক অংশই নির্ভর করে।
কানাডা ভিসার দাম কত
বর্তমানে যেহেতু কানাডা বিভিন্ন ধরনের ভিসার সুযোগ দিয়ে থাকে। যেমন নির্মাণ কাজ
কৃষিকাজ আইটি ডিপার্টমেন্ট ডেলিভারি ম্যান ড্রাইভিং সেফ উপ সহ বিভিন্ন রকম ভিসা
প্রদান করে সেজন্য কানাডার টুরিস্ট ভিসা স্টুডেন্ট ভিসা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম
ন্যূনতম ৩ লাখ থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়। এবং সর্বোচ্চ কানাডা
ভিসার দাম ৮ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ১২ লাখ টাকাপর্যন্তহয়ে থাকে।
কানাডা যেতে কত বয়স প্রয়োজন
প্রতিটা দেশেই ন্যূনতম ১৮ বছর হওয়া প্রয়োজন। ভিসার ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে
সর্বোচ্চ ২১ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেমন স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডায় যেতেন অন্যতম
বয়স লাগে ১৮ বছর। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজের উদ্দেশ্যে কানাডা যেতে হলে
নূন্যতম ২১ বছর লাগে তবে টুরিস্ট ভিসায় ১৮ বছরের নিচে হলেও চলবে এক্ষেত্রে
প্রত্যেক অভিভাবক কে অনুমতি পত্র দিতে হয়। বাংলাদেশে নাগরিকদের জন্য অনেক
সুযোগ-সুবিধা রয়েছে । বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসার মাধ্যমে কানলা যেতে পারে। তবে
খরচের বিষয়টা সম্পূর্ণ এজেন্সি ও দালালের উপর নির্ভর করে। সেজন্য কোন ভিসা তৈরি
করার পূর্বেই আপনাকে কোন পরিচিত এজেন্সি বা দালালের সাহায্য নিতে পারে যাতে করে
আপনি প্রতারণার সম্ভাবনা কম হয়।
কানাডা ভিজিট ভিসা পাওয়ার নিয়ম
আপনি যদি কানাডায় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতে চান তাহলে আপনাকে সর্বপ্রথম একটি
পাসপোর্ট তৈরি করতে হবে। অথবা আপনার যদি পূর্ববর্তী পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে সে
৫ ফুটের সর্বনিম্ন 6 মাস মেয়াদ থাকতে হবে। তারপর আপনার সকল কাগজপত্র নিয়ে
বাংলাদেশে অবস্থিত কানাডিয়ান এম্বাসিতে যেতে হবে হবে।
সেখান থেকে যথার্থ নিয়মে ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার কাগজপত্র
কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করার পর আপনার ভিসা আবেদন গ্রহণ করবে। আপনার সবকিছু ঠিকঠাক
থাকলে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে আপনি ভিসা হাতে পাবেন।
লেখক এর শেষ কথা
আশা করি কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে। আপনাকে ভিসা
আবেদন করার পূর্বে আপনার সকল ধরনের বৈধ কাগজপত্র গুলো ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে
নিতে হবে। আপনি যদি নিজের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন তো ভালো যদি নিজের মাধ্যমে
আবেদন প্রক্রিয়া করতেন না পারেন তাহলে অবশ্যই কোনো এজেন্সির সহযোগিতা নিবেন।
www.alltipsatoz.comনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url