প্রাকৃতিক উপায়ে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর ১০টি কার্যকারী উপায় সম্পর্কে জানুন

রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া বর্তমানে নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শরীরে আয়রনের ঘাটতি, হিমোগ্লোবিনের অভাব বা রক্ত তৈরীর প্রক্রিয়া জটিলতা থাকলে অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে। 

প্রাকৃতিক-উপায়ে-হিমোগ্লোবিন-বাড়ানোর-১০টি-কার্যকারী-উপায়এ অবস্থায় কারি পাতা হতে পারে একটি প্রাকৃতিক ও সহজ সমাধান। চলুন জেনে নেওয়া যাক কারি পাতা কিভাবে রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।আজকে এই পোস্টটির মধ্যে আমি আপনাদেরকে কারি পাতার কিভাবে রক্তস্বল্পতা দূর করে এই সম্পর্কে আলোচনা করব।

পেজ সূচিপত্রঃ প্রাকৃতিক উপায়ে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর ১০টি কার্যকারী উপায়

কারি পাতা প্রাকৃতিক আয়রনের উৎস

প্রাকৃতিক-উপায়ে-হিমোগ্লোবিন-বাড়ানোর-কার্যকারী-উপায়

কারি পাতা প্রাকৃতিক আয়রনের উৎসঃ কারি পাতা আইরনের একটি ভালো প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে কাজ করে। আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে আয়রন একটি অপরিহার্য উপাদান। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অক্সিজেন পরিবহন বাঁধাকস্ত হয। নিয়মিত কারি পাতা খেলে শরীরের প্রাকৃতিক ভাবেই আয়রনের ঘাটতি পূরণ হতে থাকে।

ফলিক এসিড সমৃদ্ধ কারিপাতা

ফলিক এসিড বা ভিটামিন বি ৯ রক্ত তৈরির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারি পাতের শরীরের নতুন রক্ত কণিকা গঠনে সহায়তা করে। কারি পাতায় থাকা শরিক এসিড শরীরের রক্ত তৈরির প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। ফলিক এসিডের অভাবে শরীরের মেগা লোকাস্টিক অ্যানিমিয়া হতে পারে যা কারি পাতার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই রক্তস্বল্পতা নিরাময়ে একটি বিশেষ সহায়ক।

আরো পড়ুনঃ লবঙ্গের বিস্ময়কর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আইরন শোষণের সাহায্য করে ভিটামিন সি

কারি পাতায় ভিটামিন সি রয়েছে, যার শরীরের আয়রনের শোষণ বাড়িয়ে তোলে। আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি যদি শরীরের ভিটামিন সি না থাকে, তাহলে আয়রনের সঠিক ব্যবহার হয় না। কারি পাতা খেলে দুই উপকারী একসাথে পাওয়া যায় আয়রনও পাওয়া যায় এবং সে আয়রন শোষণের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি ও পাওয়া যায়। এই কারণে এটি অ্যানিমিয়া বিরুদ্ধে দ্বিগুণ কার্যকর।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়

কারি পাতায় থাকা আইরন ফলিক এসিড ও অন্যান্য মিনারেলের হিমোগ্লোবিন তৈরির কাজ করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়লে শরীরে বেশি শক্তিশালী থাকে এবং অক্সিজেন সরবরাহ সঠিকভাবে হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা নিয়মিত কারি পাতা খায় তাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা তুলনামূলকভাবেই ভালো থাকে। বিশেষ করে যাদের হালকা থেকে মাঝারি রক্তস্বল্পতা রয়েছে, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ সমাধান।

গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী

গর্ভবতী-নারীদের-জন্য-উপকারী

গর্ভ অবস্থায় নারীদের শরীরের অতিরিক্ত আয়রনের প্রয়োজন পড়ে, কারণ তখন মা ও শিশু উভয়ের জন্য রক্ত তৈরি চাহিদা বাড়ে। কারি পাতা ফলিক এসিড আয়রনের উৎস হিসেবে গর্ভবতী নারীদের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর হতে পারে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে একটি খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা উচত।এটি গর্ভ অবস্থায় প্রতিরোধ এবং শিশুদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে সহজ ব্যবহারযোগ্য

ব্যবহারের কোন জটিলতা নেই। সহজে পাওয়া যায় এবং রান্নায় ব্যবহার করলেও উপকার মিলে। চাইলে আপনি এটি চিবিয়ে খেতে পারেন, রস করে পান করতে পারে বাচা বানিয়ে খেতে পারেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে৮-১০ টিকারিপাতা চিবিয়ে খেলে রক্তস্বল্পতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এটি একটি সহজ সস্তা ও আকৃতি সমাধান।

আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্ময়ক ৩০ টি তথ্য জানুন

কারি পাতা ও গুড়ের মিশ্রণ রক্তস্বল্পতার ঘরোয়া ওষুধ

গুড় দিয়েও আয়রনের ভালো উৎস। কারি পাতা ও গৌড় একসাথে খাওয়ার মাধ্যমে রক্তে আয়রনের মাত্রা দ্রুত বাড়ানো সম্ভব। প্রতিদিন সকালে কারি পাতা বেটে তার সঙ্গে সামান্য গুড় মিশিয়ে খেলে রক্তস্বল্পতা দ্রুত হ্রাস পায়। এটি গ্রামীন এলাকায় অনেকে ব্যবহার করে থাকে এবং এটি কার্যকর একটি ঘরোয়া টোটকা।

ক্লান্তি ও দুর্বলতা কমায়

রক্তস্বল্পতার অন্যতম লক্ষর হচ্ছে অতিরিক্ত ক্লান্তি ও শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া। শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে, ফলে হিমোগ্লো বৃদ্ধি পায় এবং শরীর শক্তি ফিরে পায়।কিছুদিন নিয়মিত খাওয়ার পর আপনি নিজেই বুঝবেন যে আপনি আগের তুলনাই বেশি সতেজ ও শক্তিশালী অনুভব করছেন। কাজের ক্ষমতাও বাড়ে এবং মন ভালো থাকে।

আরো পড়ুনঃ আম খাওয়ার অসাধারণ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ২৫ টি তথ্য জানুন

রক্তে অক্সিজেন পরিবহন উন্নত করে

রক্তে-অক্সিজেন-পরিবহন-উন্নত-করে

হিমোগ্লোবিনের কাজ হল শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়া। রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে অক্সিজেন পরিবহন কমে যায়, যা মাথা ঘোর্‌ শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি তৈরি করে। কারি পাতার রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়িয়ে এই সমস্যার সমাধান করে। তাই যারা অল্প পরিশ্রমে হারিয়ে যান বা মাথা ঘোরার সমস্যায় ভোগেন, তারা এটি নিয়মিত খেলে উপকার পাবে।

উপসংহার/প্রাকৃতিক উপায়ে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর ১০টি কার্যকরী উপায়

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে কারি পাতা আমাদের ঘরের রান্নায় প্রতিদিন ব্যবহারিত একটি সাধারণ উপাদান হলেও এর ভেশোধ গুণ অসাধারণ। রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ ও নিরাময়ে এটি একটি প্রাকৃতিক উপকারী পথ। তবে যারা দীর্ঘদিন অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন এবং খাদ্য তালিকায় কারি পাতা অন্তর্ভুক্ত করে এর উপকারিতা গ্রহণ করবেন। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। এমন আরো পোস্ট এতে আমাদের পেজটি ফলো দিয়ে রাখুন আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি আল্লাহ হাফেজ।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

www.alltipsatoz.comনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url